সাখাওয়াত হাবীব লিটন, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: মাচার নিচে হলুদ আর কালো তরমুজের ঝুলন্ত রূপ যেন চোখ জুড়িয়ে দেয়। সবুজ কচি লতাপাতার মাঝে ঝুলছে হলুদ রঙের তরমুজ। ছোট-বড় তরমুজে নুয়ে পড়েছে মাচা। ঠিক যেন হলুদের সমারোহ। এমনটাই দৃশ্য চোখে পড়ে নওগাঁ জেলার অন্তর্গত সাপাহার উপজেলার উমইল গ্রামে।
উপজেলায় এই প্রথম মালচিং পদ্ধতিতে হলুদ ও কালো তরমুজ চাষ করা হয়েছে। তাই এ তরমুজ চাষ দেখতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।
গত বছরে হলুদ তরমুজ চাষ করে সফল হওয়ার পর এবারেও তরমুজ চাষ করছেন উপজেলার কৃষক গোলাম রাব্বানী। তথ্য প্রযুক্তির যুগে ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। হলুদ তরমুজ দেখলে যেমন চোখ জুড়িয়ে যায় পাশাপাশি খেতেও সুস্বাদু ও রসালো হবার ফলে অধিক লাভবান হবার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
উপজেলার উমইল মাঠে গোলাম রাব্বানীর তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে হলুদের সমারোহ। তিনি গত বছর হলুদ তরমুজ চাষ করে পুঁজি পেয়ে কিছুটা লাভবান হয়েছেন। তাই এবারেও ইউটিউব দেখে এবং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় হলুদ তরমুজ চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন তিনি।
চাষি গোলাম রাব্বানী জানান,গত বছর তিনি ১০ শতাংশ জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ করেন। কিন্তু সেবছর তেমন ভাবে লাভবান না হলেও পুঁজি পেয়েছেন সাথে কিছুটা লভ্যাংশ। তাই আবারো ঝুঁকি নিয়ে এবছরে হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন সেই ১০শতাংশ জমিতেই। মাত্র ৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে এপর্যন্ত প্রায় ৩০/৩৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রয় করেছেন তিনি। তিনি আরো বলেন এই জাতের তরমুজ রোপনের প্রায় ৭০ দিনের মধ্যেই ফল পাওয়া যায়। স্বল্প পরিচর্যায় এই ফল উৎপাদন সম্ভব। আর অসময়ে এই ফল উৎপাদিত হবার ফলে চড়া দামে বিক্রয় করা যায়। সেজন্য সামনে বছর হলুদ তরমুজ চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি করবেন বলেও জানান তিনি।
বর্তমান বাজারে হলুদ জাতের তরমুজের প্রতি কেজির দাম প্রায় একশ টাকা। যার ফলে অনেকটাই লাভবান হবেন কৃষক গোলাম রাব্বানী।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, অল্প খরচে আর কম পরিচর্যায় হলুদ তরমুজের ফলন দেখে আমরা অনেকটাই অবাক হয়েছি। গোলাম রাব্বানীকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সামনে বছর থেকে আমরাও চাষ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানান, হলুদ তরমুজের চেয়ে কালো তরমুজ চাষে অনেকটা লাভবান হওয়া যায়।এই জাতের তরমুজ খুব রসালো ও সুমিষ্ট হয়ে থাকে। পাশাপাশি অসময়ে তরমুজ উৎপাদন হবার ফলে কৃষকেরা লাভবান হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও কৃষক গোলাম রাব্বানীকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে সকল প্রকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
Leave a Reply